ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​উপসচিবদের গাড়ি কেনার ঋণ ও পদোন্নতিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৫-০২-২০২৫ ০৭:৩৫:২৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৫-০২-২০২৫ ০৭:৩৫:২৯ অপরাহ্ন
​উপসচিবদের গাড়ি কেনার ঋণ ও পদোন্নতিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের সুপারিশ ​ছবি: সংগৃহীত
সচিবালয়ের উপসচিবদের গাড়ি কেনার ঋণ এবং গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এ সুযোগ সচিবালয়ের বাইরে অন্যান্য সার্ভিসের কর্মকর্তাদের জন্য নেই। এ ব্যবস্থা বাতিল করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। কমিশন মনে করে, এতে একদিকে বৈষম্য দূর হবে এবং অপরদিকে সরকারের ব্যয়  হ্রাস পাবে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে প্রতিবেদন তুলে দেন।

প্রতিবেদনে বিভিন্ন সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক দেশের মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রদত্ত ইনডেক্স বিশ্লেষণ করে মূল বেতন প্রতি বছর বেতন বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তবে তা ৫ শতাংশের বেশি হবে না। এ উদ্দেশ্যে একটি স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করা হয়।  

বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে পাবলিক সার্ভিস অ্যাক্ট, ২০১৮ এর ধারা ৪৫ বিধান অনুসারে ২৫ বছর চাকরির পরে সরকার ইচ্ছে করলে কাউকে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে পারবে বলে যে বিধান রয়েছে, তা বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন নিশ্চিত করার জন্য একই সুপারিশ করা হয়েছে।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত অফিসার/কর্মচারীকে অফিসার অন ষ্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) না করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কোনও ওএসডি কর্মকর্তাকে কাজ না দিয়ে বেতন-ভাতা দেওয়ার পরিবর্তে তাদের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে শিক্ষকতা বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাময়িকভাবে পদায়ন করা যেতে পারে বলে জানায় সংস্কার কমিশন। 

এছাড়া সচিবালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে কমপক্ষে দুই বছর চাকরি করেছে— এমন কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা সমমানের পদে পোস্টিং পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলেও মত দিয়েছে কমিশন। 

পদোন্নতির ক্ষেত্রে পুলিশ বা কোনও গোয়েন্দা বিভাগের কাছে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়ার প্রথা বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে কমিশন বলছে, জনপ্রশাসনে রাজনীতিকীকরণ এ স্তর থেকেই শুরু হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার আগে কোনও প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন করা যাবে না। বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ বিভাগের কাছে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা আছে কিনা, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন চাইবে। প্রয়োজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রতিবেদন চাইতে পারে। পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরিবর্তে প্রার্থীর যোগদানকৃত মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্পাদিত হবে। এ ছাড়া পাসপোর্ট, দ্বৈত নাগরিকত্ব, সমাজসেবা সংস্থা বা এনজিও-র বোর্ড গঠন ইত্যাদি নাগরিকসেবার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম বাতিল করার জন্যও সুপারিশ করা হয়। একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র থাকলে তার বিষয় নিষ্পত্তি করা যেতে পারে বলে মনে করে কমিশন।

এছাড়া কোনও সরকারি কর্মকর্তা কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে আয়োজিত কোনও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না,  বলে নির্দেশনা জারি করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।  বিশেষ করে বিভিন্ন সার্ভিসের নামে যে সব সমিতি রয়েছে, তারা কোনও রাজনৈতিক দল বা নেতার পরিচয় দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে, বা দাবি আদায়ের জন্য কোনও বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারবেন না। ব্যক্তি হিসেবে কেউ সংক্ষুদ্ধ বা বৈষম্যের শিকার হলে, তার প্রতিকারের জন্য তিনি বিধি মোতাবেক আবেদন করতে পারবেন বলেও মত দেয় কমিশন।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ